রাত ১১ টা বাজে,,,। হুমায়রা বউ সেজে বাসর ঘরে বসে আছে। এদিকে ভাবীরা আমাকে জোর করেই ঘরের ভেতরে ঢুকানোর চেষ্টা করছে। শেষে বাসর ঘরে ঢুকেই গেলাম। বাসর ঘর নিয়ে কত যে স্বপ্ন দেখছি,,,। আর আজকে কিনা সেই বাসর ঘরের স্বপ্ন টা পূরণ হবে। ভাবতেই খুশিতে নাচতে ইচ্ছে করতাছে। যাইহোক ঘরে ডুকে দেখলাম,,, পুরো খাট ফুল দিয়ে সাজানো,,,, আর ভেতরে আমার বউ হুমায়রা বসে আছে। আমি ঘরে ঢুকতেই,, হুমায়রা খাট থেকে নেমে আমার কাছে এলো। আজকে কেমন জানি লাগতেছে,,, পছন্দের মানুষটাকে নিজের করে পাওয়ার মজাই আলাদা। আমি কি করব কিছু বুঝতে পারছি না। হুমায়রা লম্বা একটা ঘোমটা দিয়ে রেখেছে,,,,। হুমায়রা কছে এসে আমাকে সালাম করল। যাক বেশ বুদ্ধিমতি মেয়ে,,, বাসর রাতে যে স্বামীকে সালাম করতে হয় সেটা জানে। সালাম করার পর হুমায়রা বলল।
হুমায়রা : চল আগে দুই রাকাত নামাজ পড়ে আল্লাহ তায়ালার কাছে শুকরিয়া আদায় করি।
আমি : হ্যা,,,,,চল।
হুমায়রা : ওজু আছে তোমার?
আমি : হ্যা,,।
দুইজনে জায়নামাজ বিছিয়ে দুই রাকাত নামাজ আদায় করলাম। আল্লাহ তায়ালার কাছে শুকরিয়া জানালাম,,,। আমার পছন্দের মানুষটি আজকে থেকে আমার। নামাজ আদায় শেষে,,,। আমি খাটে গিয়ে বসলাম,, হুমায়রাও আমার থেকে একটু দুরে গিয়ে বসল। আমি কি করব কিছুই বুঝতেছি না। শেষে সাহস করে বললাম
আমি : আমি তোমার হাতটা ধরতে পারি?
হুমায়রা : (কোন কথা নাই চুপ করে আছে)।
আমি ধীরে ধীরে ওর কাছে গেলাম,,, ও এখনো ঘোমটা দিয়ে রেখেছে। আস্তে করে ওর ঘোমটা সরালাম। ওর মুখটা উপরের দিকে তুললাম,,,। বাহ্,,হুমায়রাকে বউ সাজে বেশ সুন্দর লাগতাছে। আমি তখন বললাম।
আমি : তুমি ফ্রেশ হয়ে এসো,,,,। এগুলো পাল্টে এই নীল শাড়িটা পরে আসো।
হুমায়রা : তুমি কয়েক মিনিট অপেক্ষা কর,,, আমি এগুলো পাল্টে আসি,,,,।
১০ মিনিট পর হুমায়রা নীল শাড়িটি পরে আসলো,,,। ওয়াও,, নীল শাড়িতে ওকে কি সুন্দর লাগতাছে।
আমি : তেমাকে তো এখনি বেশি সুন্দর লাগছে।
হুমায়রা : তাই,,,।
আমি : হুম,,।
হুমায়রা : এখন যাও তুমিও ফ্রেশ হয়ে এসো।
আমি : তুমি কিন্তু,,, আগে কখনো আমাকে তুমি কইরা বলো নাই,,,।
হুমায়রা : আগে বলি নাই তো কি হয়েছে,,, তুমিও তো আমাকে আগে তুই করে বলতা,,, তারপরে তুমি করে বলা শুরু করছো,,,,।যাও তো এখন ফ্রেশ হয়ে এসো। তার পরে আমরা গল্প করি।
৫ মিনিট পর ফ্রেশ হয়ে এলাম।
হুমায়রা : জানো,,,,কি,,?
আমি : কি জানবো,,,।
হুমায়রা : আজকে আমার বউ সাজার ইচ্ছাটা পূরন হইছে।
আমি : আমারো,,,তোমাকে বউ হিসেবে পাওয়ার ইচ্ছা পূরণ হইছে।
হুমায়রা : তাই,, নাকি,,,কিন্তু আমার প্রতি নাকি তোমার কোন ফিলিংস কাজ করে না,,, তাহলে,,।
আমি : সেটা,,,মাঝখানে করত না,,,কিন্তু এখন তো আবার করা শুরু করছে,,,,, একটু কাছে আসো না।
হুমায়রা : কেন কাছে যাবো কেন ওখানেই থাকো,,,আমার কাছে আসার চেষ্টাও করবে না।
আমি : কেন,,,আমি তো তোমার হাসবেন্ড,,, আমি আসবো না তো কে আসবে,,,। (এই বলে ওর কাছে এগিয়ে গেলাম)
হুমায়রা : কাছে আসবে না,,,আমি কিন্তু চেঁচাবো।
আমি : আরে আজব তো,,,,। প্লিজ,, সোনা,, এই রাতের জন্য অনেক দিন ধরে অপেক্ষা করতাছি,,, একটু কাছে আসো না,,, জান,,।
হুমায়রা : বাবু,,সোনা বলে কোন লাভ নাই,,,, সোনা। আমি আমার কাছে আসতে দেবো না।
আমি : কিন্তু কেন?
হুমায়রা : ওই আমি তোমার থেকে বড় না,,,,।
আমি : তাতে কি হইছে বউ তো তুমি আমার।
হুমায়রা : এত শখ কেন,, হুম,,।
আমি : তোমাকে ধরতে দিবা না তাহলে?
হুমায়রা : ধরতে দিতে পারি,, তবে একটা কথা আছে,,,।
আমি : কি কথা,,, তাড়াতাড়ি বল।
হুমায়রা : আমার অনেক গুলো ছোট ছোট আবদার আছে,, সেগুলো তোমাকে পূরণ করতে হবে।
আমি : তো,,আমিই তো পূরণ করব,, আর কে করবে।
হুমায়রা : আগে একটা কথা বল?
আমি : কি।
হুমায়রা : তুমি আমার আগে কয়টা মেয়ের পিছনে ঘুরছ?
আমি : এইটা,,,কোন কথা হলো।
হুমায়রা : আগে বল,,,,।
আমি : স্কুলে থাকতে একটা মেয়েরে পছন্দ করছিলাম।
হুমায়রা : (একটু রাগী রাগী কন্ঠে) আর যদি কোন দিনও আমি ছাড়া অন্য কোন মেয়ের দিকে তাকাস না তোর খবর করে ছাড়বো,,,,এদিকে আয়।
বলেই আমাকে ওর কাছে টান দিয়ে চুমু দিয়ে নাক,মুখ, কান সব ভরিয়ে দিল।
হুমায়রা : আচ্ছা,,,আল্লাহ,, আমাদের আগে থেকেই মিলিয়ে রাখছিল না,,,,যে আমিই তোমার বউ হবো।
আমি : হুম,,, সোনা,,,। এবার আরে কাছে এসো।
হুমায়রা : কি,,,করতাছো ছাড়ো না,,,।
আমি ওর কোনো কথাই শুনলাম না। ওর ঠোঁটের সাথে আমার ঠোঁট মিলিয়ে দিলাম,,,,, বাকিটা ইতিহাস।
সমাপ্ত
0 Comments