অনুভূতি : সিনিয়র আপু ৭ (সিনিয়র চাচাতো বোন যখন বউ,বাংলা ভালোবাসার গল্প) Feelings : senior apu 7 (Bangla Romantic love story)

 


তারপর যখন খালার বাসায় ফিরে আসি,,,তখন সোনিয়া কে বললাম " ওই মেয়েটার সম্পর্কে কিছু জানিস,,।" সোনিয়া বলল "লাভ নাই ওর বয়ফ্রেন্ড আছে। " আর কি করার এটাও বুকিং করা।


একমাস পর বাড়িতে এলাম,,। নিজের বাড়িতে ডুকতেই কেম জানি লজ্জা লাগছে,, কেন লাগছে তা জানি না। বাড়িতে ডুকলাম,,, সবাইকে সালাম দিলাম। তারপর আমার রুমে চলে এলাম। এর মধ্যে খবর পেয়েছি, হুমায়রা নাকি ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাইছে। বেশ খুশির খবর,, তাতে আমার কি,,,ও ওখানে ওর হাসবেন্ড কে নিয়ে থাকবে। আমি এখন আর হুমায়রার কথা মনে করি না। একবারে যে ভুলে গেছি তা নয়। মনে পরে মাঝে মাঝে। আমি এখন আমার মতন চলি, চাচী–চাচার সাথেও তেমন একটা কথা বলি না। বন্ধুদের সাথে ঘুরি,আড্ডা দেই, এভাবেই দিনকাল চলতে লাগলো। হুমায়রার কথা তেমন একটা শুনি না কাউর মুখ থেকে। 


প্রায় ২ মাস পর

একদিন রাতে ছাদে বসে আছি। আকাশে চাঁদ উঠেছে,,, চারপাশ চাঁদের আলোয় ভরে গেছে। এমন সময় কে যেন আমাকে ডাকদিল,,। আমি যে দিক থেকে ডাক আসলো ওই দিকে তাকালাম। দেখলাম যে আমাকে ডাক দিল সেটা আর কেউ নয় বরং হুমায়রাই। আমিতো অবাক হয়ে গেলাম,,, যে আমাকে দেখতেই পারে না সেই আমাকে ডাকল। আমি কিছু বললাম ওর দিক থেকে চোখ ফিরিয়ে নিলাম। ও তখন আমাকে আবার বলল। 

হুমায়রা : কিরে কেমন আছিস?

আমি: আলহামদুলিল্লাহ, ভালো,,, তুমি কেমন আছো? 

হুমায়রা : আলহামদুলিল্লাহ,। 

দুজনেই চুপ করে আছি। তখন হুমায়রা আবার বলল। 

হুমায়রা : কোন কথা বলছিস না যে? 

আমি: কি কথা বলব,,,,বলার মতো কোন কথা নাই। 

 হুমায়রা : তোর কি হয়েছে এরকম ভাবে কথা বলতাছা কেন?

 আমি: কিভাবে কথা বলছি আমি। 

 হুমায়রা : এতো রাগ করতাছা কেন। 

 আমি: রাগ না করার কোন কারণ আছে,,! তুমি এখন যাও,,, তোমার বাবা দেখে ফেললে,,,,আবার ঝামেলা হয়ে যাবে। 

হুমায়রা : তুই কি সেই দিনের জন্য এখনো রাগ করে আছিস?

আমি: না,,,তুমি এখন যাও তো। 

হুমায়রা : আমি ১০ দিন থাকব,, তারপর আবার চলে যাবো। 

আমি: হ্যা তো যাও না,,,আমারে কেন বলতে আসছো। 

হুমায়রা : বলছিলাম কালকে তো শুক্রবার,,, তুই যদি ফ্রী থাকস তাহলে আমাকে ঘুরতে নিয়ে যাবি? 

আমি: আমি কেন তোমাকে নিয়ে যাবো,,, তোমার হাসবেন্ডের কি হয়েছে,, তাকে নিয়ে যেতে পারো না। 

হুমায়রা : কী সব আবোল তাবোল বকছিস,,, আমার হাসবেন্ড আসবে কই থেকে। 

আমি:,,, মানে,,, তোমার কথা আমি বুঝতাছি না। 

হুমায়রা : আমার তো বিয়ে হয় নাই,,।

আমি: হয় নাই মানে। 

 হুমায়রা : বিয়েটা ভেঙে গেছে,,,,। 

আমি তো ওর কথা শুনে অবাক,,, কি বলছে কি ও,,আমি তো বিশ্বাস করতেই পারছি না ওর নাকি বিয়ে ভেঙে গেছে। আবার হাসিও পাচ্ছে। আমার হাসি দেখে ও বলল। 

হুমায়রা : হাসছিস কেন। 

আমি: (হাসতে হাসতে) তোমার বিয়ে ভেঙে গেছে,,, (নিজেকে একটু সামলে নিয়ে) তা করে ভাঙলো তোমার বিয়ে। 

হুমায়রা : ওরা ভালো ছিল,, অনেক টাকা যৌতুক দাবি করেছিল। 

আমি: কেন,,,কত টাকা,,,দাবি করছিল। 

হুমায়রা : ১০ লাখ টাকা। 

আমি: বল কি,,,১০ লাখ টাকা,,। তোমার বিয়ের কারনে আমাকে ১মাস বাড়ির বাইরে থাকতে হয়েছে,,, আর সেই তোমার বিয়েই হয় নাই,,,,,,। আমার মনে হয় তোমার কপালে বিয়ে নাই। 

 হুমায়রা : এভাবে কেন বলছিস,,, আমার ভাগ্যে যে থাকবে তার সাথেই হবে। 

আমি: আচ্ছা ঠিক আছে,,, এখন আমি গেলাম,,,। 

হুমায়রা : কই যাচ্ছিস শোন,,, আমাকে ঘুরতে নিয়ে যাবি না। 

আমি: কোথায় নিয়ে যাবো,,,,।তোমার বাবা-মা যদি জানতে পারে তাহলে,,,কী হবে।,,, আর এমনিতেও তোমার প্রতি আমার কোন ফিলিংস্ নাই,,,তাহলে কেন ঘুরতে নিয়ে যাবো তোমাকে। 

হুমায়রা : বাবা-মা এর চিন্তা তোকে করতে হবে না,,,সেটা আমি ম্যানেজ করে নিব। তুই শুধু নিয়ে যাওয়ার জন্য রাজি হয়ে যা। 

আমি: ঠিক আছে,,,আমি কিন্তু তোমাদের বাসায় যাবো না। রেডি বাইরে এসে আমাকে ফোন দিও। 

হুমায়রা : ঠিক আছে,,,। 

আমার এখন অনেক খুশি লাগতাছে,,, হুমায়রাকে নিয়ে ঘুরতে যাবো তার জন্য নয়,,,। খুশি লাগতাছে এই কারনে,, যে ওর বিয়ে ভেঙে গেছে। 


বিকেলে হুমায়ারা কে সাথে নিয়ে ঘুরতাছি,,,,এবারও মেলা বসেছে নদীর পাড়ে,,,। আমি হুমায়রার হাতের দিকে খেয়াল করলাম,,, হাতে কিছু পরে নাই,,,।তখন মনে হলো,,, এই ওর জন্য আমি চুরি কিনেছিলাম,,,,। আজকে আবারও মেলা বসেছে,, ওরে কি তাহলে চুরি কিনা দেবো,,,না,,না,,,আমি কেন ওকে চুরি কিনা দিতে যাবো,,,।আমি তে এখন ওকে আর ভালোবাসি না,,,। যদি ভালোই না বাসি তাহলে ওর কথা মনে হয় কেন আমার। হুমায়রা তখন বলল "আমরা একটা জায়গায় গিয়ে বসি না"। আমরা নদীর পাড়ে বেশি ঘাস আছে ওখানে গিয়ে বসলাম,,। 

হুমায়রা : ওই কিছু বলছিস না যে?  

আমি: কি বলব? 

হুমায়রা : ফুচকা খাবো।

আমি: হুম,,, তোমরা মেয়েরা তো শুধু এটাই খেতে পারো। 

একটু পর ফুচকা নিয়ে এলাম। 

হুমায়রা : আচ্ছা একটা কথা বলি। 

আমি: বল। 

হুমায়রা : তুই কি এখনো আমাকে পছন্দ করস। 

আমি: পছন্দ না করার কি আছে,,,,তবে তোমার প্রতি আগের সেই অনুভূতি টা কাজ করে না। 

হুমায়রা : চল এখন বাসায় যাওয়া যাক। 

আমি: ঠিক আছে চল। 


কিছুদিন পড়ে হুমায়রা চলে গেল। দিনকাল বেশ ভালো ভাবেই চলতে লাগলো,,,কিন্তু একদিন হটাৎ একটা দুর্ঘটনার কারনে আমার সরকারি চাকরি পাওয়ার আশা ছেড়ে দিতে হলো। তাই ফ্রিল্যান্সিং শুরু করলাম। পড়াশোনার পাশাপাশি ফ্রিল্যান্সিং থেকে ইনকাম,, এতে হাত খরচও ঠিকঠাক হয়েও আরো টাকা বাঁচত। এই টাকা জমিয়ে ছোট খাটো একটা বিজনেস শুরু করব পরে। এভাবে বেশ কিছুদিন চলে গেলো। আমার ইন্টার পরীক্ষাও শেষ।


চলবে,,,,,

Post a Comment

0 Comments