আমি : আরে,,, না,,,তেমন কিছু না,,তোকে পরে বলবনি। তোদের এলাকা কিন্তু আমাকে ঘুরে দেখাতে হবে।
সোনিয়া : তা দেখাবো নি,,,। এখন চল বাসায় যাই,,,বিকালে ঘুরতে বের হবো।
তারপর দুজনে বাসায় আসলাম। দুপুরের খাওয়া দাওয়া শেষে ঘরে শুয়ে আছি। কেন জানি হুমায়রার কথা মনে পড়ছে,,,। আজকে তো ওকে দেখতে আসবে,,,,। মনে হয় ওর সাথে আর জীবনে কথা হবে না,,।আজকেই হয়তো তার বিয়ে ঠিক হয়ে যাবে। আমার সাথেই শুধু এরকমটা হয়,,যাকে পছন্দ করি তারই বিয়ে হয়ে যায়। কিন্তু আমি কেন ওর কথা ভাবছি,, আমি তো ওকে ভুলে যেতে চাই,,,। আমি আর কথা ভাববো না,,।তখন মা ফোন দিল। ফোনটা ধরলাম,,। মা বলল,,"তুই কোথায় গিয়েছিস? আমি বললাম "আমি খালার বাসায় আসছি অনেকদিন ধরে আসিনা তাই চলে আসছি।
মা : তুই তো গেছোস,,, কিন্তু উল্টোপাল্টা কিছু যেন না করস।
আমি : উল্টোপাল্টা মানে কি বলতে চাইছো তুমি?
মা : বলতে চাইতাছি সোনিয়ার সাথে বেশি মিশবি না।
আমি : কেন,,,? সোনিয়ার প্রতি আমার কোন অনুভূতি আসে না।
মা : না আসলেই ভালো।
আমি : তুমি আমাকে এরকম মনে কর,,,। আমি ভাবতেও পারি নাই।
মা : আরে না বাদ দে তো,, তোর খালামনিরা কেমন আছে?
আমি : সবাই ভালো আছে,,, আগে বল,, হুমায়রার কি বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে,,?
মা : হ্যা,,,দুই সপ্তাহ পরেই ওর বিয়ে।
আমি : আমি ফোন রাখলাম,, আর ফোন দিবা না।
ফোনটা বিছানার পাশে রাখলাম,,,। কেমন জানি নিজেকে অসহায় মনে হচ্ছে। নিজের পছন্দের মানুষটার বিয়ে হয়ে যাবে,, ভাবতেই কেমন জানি লাগছে,,। কি করব কিছুই বুঝতে পাড়ছি না,,,। সিগারেটও নাই যে একটু টানবো,,। বুকের ভেতর টা যেন জ্বলছে। এমন সময় সোনিয়া ঘরে এলো,,,আমাকে বলল।
সোনিয়া : কিরে কোন সমস্যা,,,?
আমি : না তেমন কিছু না,,,।
সোনিয়া : তাহলে কান্না করছিস কেন?
হুমায়রার বিয়ে হয়ে যাবে,, এটা ভাবতে ভাবতে কখন চোখ দিয়ে পানি বেড়িয়েছে যানিই না। চোখের পানি আড়াল করে বললাম
আমি: আরে তেমন কিছু না। চোখে কি যেন একটা পড়ছে।
সোনিয়া : অহ্,,,,,ঠিক আছে চল,,আমাদের গ্রাম টা তোকে ঘুড়িয়ে দেখাই,,,।
আমি : আচ্ছা,, ঠিক আছে চল।
দুজনে হাটতাছি ধান ক্ষেতের আইল দিয়ে,, দুই পাশে ধানক্ষেত। যতদুর চোখ যায় খালি সবুজের সমারোহ। আমি সোনিয়া কে বললাম তুই একটু সুন্দর করে পোজ নিয়ে দারা,,,আমি তোর ছবি তুলি,,,। আমরা অনেক ছবি তুললাম। সন্ধ্যার আগ দিয়ে বাসায় ফিরলাম। রাতে ছাদে বসে আছি হুমায়রার কথা আবার মনে পড়ল,,।ওর কথা কেন মনে হইতাছে আমার। ও তো কয়দিন পর অন্য কাউর হবে যাবে। আমি কেন ওর কথা ভাবতে যাবো,,,।কিন্তু কিছুতেই ওকে ভুলতে পারছি না,,,কেমন জানি ও আরো আমার মনের ভিতর আরো গভীরে চলে যাচ্ছে। যতোই ওকে ভুলতে চাই ওকে আরো বেশি বেশি মনে পরে,,,। এমন সময় সোনিয়া এলো,, এসে বলল " কিরে এভাবে বসে আসিছ এখানে। " আমি বললাম "কিছু না এমনিই বসে আছি "। সোনিয়া বলল "চল আমরা গল্প করি "। আমি বললাম " ঠিক আছে "
সোনিয়া : তাহলে বল তোর গার্লফ্রেন্ড কয়টা?
আমি : একটাও না।
সোনিয়া : মিথ্যা বলস কেন,,, তোর না,, কি যেন নাম ওর,, ও হ্যা রিয়া,,,নামের একটা মেয়েরে না পছন্দ করতি,,ওর কি হলো।
আমি : বিয়ে হয়ে গেছে ওর?
সোনিয়া : সে স্যাড,,, বলছিলি কখনো ওকে,,?
আমি : বলছিলাম,, কিন্তু অনেক দেরিতে,,, ওর তখন বিয়ে ঠিক হয়ে যায়। প্রেম না করেই ছ্যাকা খেয়ে গেছি।
সোনিয়া : তর কষ্ট হয় নাই।
আমি : তেমন কষ্ট হয় নাই,, তিন মাস মুড অফ,, তারপর আবার নতুন কাউকে পেলাম,,,এখন তারো বিয়ে হয়ে যাবে।
সোনিয়া : নতুন কাউকে,, কে সে।
আমি : হুমায়রা,,,।
সোনিয়া : তোর চাচাতো বোন,,, কিন্তু ও তো তোর থেকে বড়।
আমি : সেই জন্য ই তো কেউ মানল না,,,। এখন ওর বিয়ে ঠিক করছে।
সোনিয়া : তুই যারে পছন্দ করস তারই বিয়ে হয়ে যায়।,, চিন্তা করিস না আরেক টা পেয়ে যাবি। যদি তোর ভাগ্যে হুমায়রা থাকে,, তাহলে ওরেই পাবি,,,।
আমি : তুই একদম ঠিকই বলেছিস,,,,। ও গেলে আরেকটা পাবো,,,দেশে কি মেয়ের অভাব পরছে নাকি।
সোনিয়া : ঠিক,, দেশে তো মেয়ের অভাব নাই,,তাহলে কেন একজনের জন্য ভেবে জীবন নষ্ট করবি।
আমিও মনে মনে ভাবলাম সোনিয়া যা বলছে একদম ঠিকই বলছে,,। হুমায়রা গেলে আমি আরেক জনকে পাবো,,যেমনটা রিয়া যাওয়ার পর হুমায়রা আমার জীবনে এন্ট্রি মেরেছিল। তাইতো লোকে বলে " জীবনের সব প্রেমই প্রথম প্রেম,যদি প্রথম জনকেই ভালোবাসতাম তাহলে আর দ্বিতীয় জন কে পছন্দ হতো না,,। "
কি লাভ একজনের কথা ভেবে সারাজীবনটা নষ্ট করার। জীবনে কতজন আসবে যাবে,, এইটাই নিয়ম। এই নিয়ম যে মেনে নিতে পারবে সেই সফল হবে,আর পরে সে এর থেকেও উত্তম কিছু পাবে,,আর যে একজনের কথা ভেবেই সারাজীবন কাটিয়ে দিবে,,সে নিজেকে নিজেই ধ্বংস করবে। "আল্লাহ তায়ালা এত সুন্দর একটা জীবন দিয়েছে,,, আর আমরা কিনা সেটা নিজে নিজেই ধ্বংস করব। কখনোই না,,। আমি আর হুমায়রার কথা মনে করব না। নিজের কথা,ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে চলব। জানি ওকে ভুলতে একটু কষ্ট হবে,,,।তরপরও সুন্দর ভবিষ্যত চাইলে কিছুটা স্যাক্রিফাইস করতেই হবে।
খালার বাসায় প্রায় এক মাস হয়ে গেলো,,,।এতোদিনে হয়তে হুমায়রার বিয়ে হয়ে গেছে। এখন হয়তো সে তার শশুর বাড়িতে থাকে। যাইহোক ওরে নিয়ে তেমন একটা ভাবতে চাই না। তারপরও মনে পরে যায়। খালার বাসায় ভালো ভাবেই দিনগুলো কাটলো,,,।এর মধ্যে সোহেল ভাইয়ের শশুর বাড়িতে গেছিলাম। সোহেল ভাইয়ের একটা শালী আছে আমি সেটা জানতামই না।এটা ভাবীর আপন বোন নয় চাচাতো বোন। মাইরি সেই লেভেলের সুন্দরী,, কিন্তু ওর প্রতিও তেমন একটা অনুভুতি কাজ করে নাই। তারপরও সোনিয়াকে বলছিলাম ওর সাথে যেন আমার লাইনটা করিয়ে দেয়,,,। কিন্তু সোনিয়া কিছুতেই আমাকে সাহায্য করতে রাজি হচ্ছিল না,,, অনেক চেষ্টার পর সাহায্য করতে রাজি হয়। তারপর যখন খালার বাসায় ফিরে আসি,,,তখন সোনিয়া কে বললাম " ওই মেয়েটার সম্পর্কে কিছু জানিস,,।" সোনিয়া বলল "লাভ নাই ওর বয়ফ্রেন্ড আছে। " আর কি করার এটাও বুকিং করা।
চলবে,,,,
0 Comments