কিন্তু,,, আমি কি করছি,, আমাকে তে বলবা?
বাবা : বলছি না আর একটাও কথা বলবানা,,,। তোমার কারণে আমাদের দুই ভাইয়ের সম্পর্ক নষ্ট করতে পারবো না।
আমি আর কোন কথা না বলে চুপচাপ আমার রুমে চলে এলাম। হুমায়রার উপর এতো টা রাগ হচ্ছে আমার বলে বুঝাতে পারবো না।ওরে আমি এত ভালোবাসতাম,,,, আর ও আমার সাথে এই রকম একটা কাজ করল। মনে মনে ভাবলাম,,,আমি আজকে থেকে আর হুমায়রার ধারের কাছেও যাবো না। ওরে নিয়ে আর ভাববোও না।
পরের দিন বিকেলে আমি মামার বাসায় যাওয়ার বদলে খালার বাসায় চলে এসেছি। কারন মামার বাসা আমাদের বাসা থেকে তেমন একটা দুরে নয়। কলেজ থেকে ১৫ টাকা ভাড়া লাগে মামার বাসায় যেতে। আর খালার বাসা নাটোরে । তাই ভাবলাম একমাস এখানেই থাকবো।
আসার সময় খালাকে ফোন করে বলেছিলাম যে আমি তাদের বাসায় যাচ্ছি। খালার বাসায় আসতে আসতে অনেক রাত হয়ে গেলো। যাইহোক বাসায় এসে পৌছালাম,,, খালা দেখে অনেক খুশি হলো। সেই তিন বছর আগে এসেছিলাম। ফ্রেশ হয়ে,, খাওয়া দাওয়া করলাম। তারপর খালা একটা রুম দেখিয়ে দিল। ওই রুমে গিয়ে সুয়ে পরলাম। খালু ব্যাবসার কাজে লন্ডন গেছে,খালাতো ভাই তার বউকে নিয়ে ঢাকা থাকে চাকরির জন্য। আর একজন আছে সে হলো আমার খালাতো বোন,,,ও আমার থেকে তেমন একটা ছোট না কয়েক মাসের ছোট বড়,।
অনেকটা পথ গাড়ি জার্নি করে এসেছি। তাই শুয়ে পরতেই কখন ঘুমিয়ে গেছি জানি না। সকাল বেলা খালা ডেকে দিলো। ঘুম থেকে উঠে ফ্রেশ হয়ে খাওয়া দাওয়া করলাম। কেমন জানি বোরিং লাগতাছে । খালাকে বললাম " খালা সোনিয়া (আমার খালাতো বোন) কোথায়?
খালা : সোনিয়া তো কলেজে গেছে।
আমি : কখন ফিরবে?
খালা : এইতো দুপুরেই ফিরে আসবে। কেন কি হয়েছে,,খারাপ লাগতাছে?
আমি : না এমনি বলছিলাম।
খালা : তুই বাইরে দিয়ে ঘুরে আয়,,,। গ্রাম টা ঘুরে ঘুরে দেখ।
আমি : ধুর একা ঘুরতে ভালো লাগে নাকি ।
খালা : সোনিয়ার কলেজের সামনে যা,,, ওকে নিয়ে আয়। ওর কলেজ তো কাছেই আছে।
আমি : সোহেল ভাই (খালাতো ভাই) ওরা কবে আসবে?
খালা : এইতো সামনের রবিবারে,,।
আচ্ছা ঠিক আছে,, আমি বাইরে গেলাম বলে বেরিয়ে আসলাম।
সোনিয়ার কলেজের সামনে দাঁড়িয়ে আছি। কিন্তু সোনিয়া কোথায় সেটাই তো জানি না। মনে পড়ল খালার কাছ থেকে তো সোনিয়ার নাম্বার নিয়েছিলাম। সোনিয়াকে কল করে ডাকি। (রিং হচ্ছে), ,, ওইপাশ থেকে।
সোনিয়া : আসসালামু আলাইকুম,,, কে?
আমি : ওয়ালাইকুম আসসালাম। বলতো আমি কে?
সোনিয়া : আমি কি করে বলব আপনি কে,,,।আপনি কল দিছেন,,আপনি বলবেন আপনি কে।
আমি : আমি তোমার জামাই ।
সোনিয়া : ফাইজলামি করার জায়গা পান না,,,,। যত্তসব ফাউল লোক।
আমি : বিশ্বাস হয় না,, তোমাদের কলেজে এর সামনে আসো,,তাহলেই দেখতে পাবা।
সোনিয়া : তুই ওইখানেই দাড়িয়ে থাক,, আমি আসতাছি,,আজকে তোর খবর আছে।
আমি : আয়,, আয়,,আমি তোর জন্যই অপেক্ষা করতাছি।
ফোন কেটে দিয়ে। মুখে মাস্ক পরে নিলাম,,যেন না চিনতে পারে।
একটুপর একটা মেয়ে আসলো বোরখা পরে। আশেপাশে তাকালো মনে হয় কাউকে খুজতেছে,,,। আমি মনে মনে ভাবলাম ওইটায় হয়তো সোনিয়া হবে। ওটা সোনিয়া নাকি সেটা বোঝার জন্য,,সোনিয়াকে আবার কল করলাম। দেখলাম ওই মেয়েটাও ফোন ধরল,,এদিকে সোনিয়াও ফোন ধরেছে। আমি বুঝলাম যে ওইটাই সোনিয়া,,,। ফোনে বললাম তোমার ডানপাশে দেখ আমি দাড়িয়ে আছি,,। ওই মেয়েটাও আমার দিকে তাকাল,,,। আমি হাত বাড়িয়ে ডাকলাম। মেয়েটা আমার দিকে আসতে লাগলো। মেয়েটা এসেই,,,বলল,, "আপনিই আমাকে ফোন দিয়েছেন। "। আমি তো সোনিয়াকে চিনতে পাড়লাম কিন্তু ও আমাকে এখনোও চিনতে পারেনি। ও আবার বলল " কি হলো কিছু বলছেন না যে,, আমার নাম্বার কোথায় পেলেন "। আমি ওর সাথে আরেকটু মজা করার জন্য ওর হাত ধরে বললাম " কেন সোনা,,তুমি আমাকে চিনতে পারো নাই,,,আমি তোমার হাসবেন্ড,, কালকে যে আমারা বিয়ে করলাম,,,এখনই ভুলে গেছো,",,। সোনিয়া বললো "কি সব বাজে কথা বলছেন,, আমার হাত ছাড়ুন,, আমি কিন্তু মানুষ ডাকবো,,,"। দেখেই বোঝা যাচ্ছে অনেক ভয় পাচ্ছে,, কিন্তু আমি ওর হাত ছাড়লাম না,,,ওর হাত ধরে আমার আরো কাছে ঠানলাম,,। ও যে-ই চিৎকার করতে যাবে,, ওমনি ওর মুখ চেপে ধরলাম। তখন আমি আমার মুখ থেকে মাস্ক টা খুলে বললাম " আস্তে আস্তে,,এটা আমি,, তোর খালাতো ভাই। ও তখন আমার হাত ছাড়িয়ে অবাক চোখে বলল "তুই,,,? "। অনেক ভয় পাইছে,,,দেখেই বোঝা যাচ্ছে। এতোটা ভয় দেখানো ঠিক হয় নাই।
আমি : সরি,,সরি,,তোকে এতটা ভয় দেখানো ঠিক হয় নাই।
সোনিয়া : হারামি তুই জানোস কতটা ভয় পাইছি।
আমি : তা তো পাবিই তুই একা একা আসতে গেছিস কেন,,,আমার জায়গায় যদি অন্য কেউ হতো,,,তখন কি করতি,,,?
সোনিয়া : আমারই ভুল হয়েছে,,, আমি আর কোন দিনও এরকম বোকামি করব না।,, কিন্তু তুই আমার নাম্বার পেলি কোথায়?
আমি : খালা দিছে।
সোনিয়া : মা,,, সকালে বলল,,যে তুই নাকি এসেছিস,,,তোর জন্য অনেকক্ষণ অপেক্ষা করছি,,,দেখা করার জন্য। কিন্তু তুই তো ঘুম থেকেই উঠলি না,,,,এদিকে কলেজের দেরি হয়ে যাচ্ছে,,, তাই তোর সাথে দেখা না করেই চলে আসছি,,। কয়দিন থাকবি তুই,,?
আমি : এইতো এক দেড় মাসের মতো।
সোনিয়া : এতদিন,,, কি ব্যাপার এতদিন থাকবি যে। কোন কাজে এসেছিস কি?
আমি : আরে,,, না,,,তেমন কিছু না,,তোকে পরে বলবনি। তোদের এলাকা কিন্তু আমাকে ঘুরে দেখাতে হবে।
সোনিয়া : তা দেখাবো নি,,,। এখন চল বাসায় যাই,,,বিকালে ঘুরতে বের হবো।
চলবে,,,,
0 Comments