অনুভূতি : সিনিয়র আপু ৪ (সিনিয়র চাচাতো বোন যখন বউ,বাংলা ভালোবাসার গল্প) Feelings : senior apu 4 (Bangla Romantic love story)

 


এভাবে বলছিস কেন,,! আমি তোকে অনেক ভালোবাসি। ঠিক আছে তোর যেহেতু সামনে পরীক্ষা তাই এই কয়দিন,,, আমি তোর আশে পাশেও আসবো না,,,,তবে পরীক্ষার পরে কিন্তু আমি আবার তোর কাছে ফিরে আসবো,,,।


ও কোন কথা না বলেই চলে গেলো,,,। আমি গাল ধরে ওর চলে যাওয়া দেখছি,,,।


প্রায় তিন মাস পর,,,।

হুমায়রার ইন্টার পরীক্ষা শেষ,,,। আমিও ইন্টার সেকেন্ড ইয়ারে উঠেছি,,,,। এই তিন মাস ওর কথা আমার অনেক মনে পড়েছে,,,। বাড়ির পাশে বাড়ি তাও ওর কাছে একবারও যায়নি। ওর আমার কথা মনে পরেছি কিনা আমি জানি না। 


আবারও একটা চাঁদনি রাত। ছাদে বসে আছি,,,।সিগারেট খাওয়া ছেড়ে দিয়েছি,,,,,,ভাবতাছি ইন্টার পরীক্ষার পর সেনাবাহিনীতে যোগ দিব,,,,,সেনাবাহিনী তে যোগ দেওয়ার কথা বললেই তো আর যোগ দেওয়া যায় না।অনেক পরিশ্রম করতে হয়। একবার যদি সেনাবাহিনী তে সুযোগ হয়ে যায় না,,,,তাহলে হুমায়রাকে আমার করে পাওয়া থেকে কোন লোকই আটকাতে পারবে না। কারন সবাই চায় তার মেয়েকে সরকারি চাকরি দেখে বিয়ে দিতে। 


হুমায়রাও দেখলাম ওদের ছাঁদে এসেছে। আমি ওকে ডাক দিলাম এবার তুই করে বললাম না তুমি করেই বলা শুরু করলাম

আমি : হুমায়রা,,,ওই,,শোনো,,,।

হুমায়রা : কি ব্যাপার ডাকছিস কেন? 

আমি : কেমন আছো তুমি? 

হুমায়রা : আলহামদুলিল্লাহ,,,, তুই কেমন আছিস?

আমি : আলহামদুলিল্লাহ,,,। একটা কথা ভাবছিলাম। 

হুমায়রা : কি কথা? 

আমি : ভাবছিলাম যে ইন্টার পরীক্ষার পর সেনাবাহিনী তে যোগ দিব।

হুমায়রা : তাই নাকি,,,তাহলে তো ভালোই। 

আমি : যদি একবার সেনাবাহিনী তে চাকরি হয়ে যায় না। তখন চাচাকে বলে তোমাকে আমার বউ বানাবো,,,। 

হুমায়রা : কি বললি তুই? আমাকে ভুলে যা,,,, আমি তোকে কোনদিনই ভালোবাসবো না ,,,। 

আমি : ভালোতো তুমি আমাকে এমনিতেই বাসবা অমনিতেও বাসবা,,,।আমি যদি সরকারি চাকরি একবার পেয়ে যাই না। তরপর তোমার বাবা নিজের হাতে তোমার হাত আমার হাতে তুলে দিবে। 

হুমায়রা : কখনোই না,,,,। আমাকে পাওয়ার ইচ্ছা ভুলে যা,,, কারন সামনের রবিবারে ই আমাকে পাত্র পক্ষ দেখতে আসছে। 

আমি : দেখতে আসছে,,, বিয়ে তো আর হচ্ছে না,,,?

হুমায়রা : পছন্দ হলে বিয়েও হয়ে যাবে,,,।

আমি : মোটেই হবে না,,,,।তোর পেত্নী কে কেউ বিয়ে করবে না,,,।

হুমায়রা : কি বললি,,? আমি পেত্নী,,,,। তারপরও তো এই পেত্নীর পিছনে পিছনে ঘুরস। 

আমি : কিসের জন্য ঘুরি,,,বুঝ না,,,?

হুমায়রা : না,,,,আমি কিছু বুঝি না,,,আর বুঝতেও চাই না,,,।আর তুই আমার সামনে আসবি,,না। তুই যদি আর কোন দিনও আমাকে ডিস্টার্ব করস,,,,। আমি কিন্তু তোর মা বাবা কে সব বলে দিব,,,। 

আমি : দিলে দেও,,তাতে কি! একদিন তো সবাই জানবে যে আমি তেমাকে ভালোবাসি,,,।


 হুমায়রা আর কোন কথা না বলে চলে যেতে লাগলো তখন আবার বললাম " এই শুক্রবারে কিন্তু আমি তেমাকে নিয়ে আবার ঘুরতে যাবো। রেডি হয়ে থেকো"। ও কোন কথা বলল না,,শুধু পিছনে তাকিয়ে মুখ ভেংচি কেটে চলে গেলো।

শুক্রবার আসলো,,,,।

আমি বিকেলে,,, হুমায়রার বাসায় গেলাম,,। চাচী কে বললাম "হুমায়রা কোথায়? " চাচী বলল " হুমায়রা ওর ঘরেই। আজকে কি তোরা ঘুরতে যাবি,,? " আমি বললাম "হ্যা,, কেন,, কোন সমস্যা আছে নাকি? " চাচী বলল " না তেমন কিছুই না,,, রবিবার দিন হুমায়রাকে দেখতে আসছে তো,,,তাই। " আমি বললাম " আপনি ভয় পাচ্ছেন নাকি,,,,আমি থাকতে হুমায়রার কোন ক্ষতি হতে দিব না,,,চিন্তার কোন কারন নেই,,।" চাচী বলল "আচ্ছা ঠিক আছে,, তাড়াতাড়ি বাসায় ফিরে আসবি কিন্তু! " আমি বললাম "ঠিক আছে,, সন্ধ্যার আগেই বাসায় ফিরে আসবো।,,,,আর হুমায়রার এখনি বিয়ে দিতে হবে,,,,আরো এক বছর পর দেও না,,,,। আমিও সরকারি চাকরি করব,,, তখন আমার কাছেই দিও।" চাচী আমার এই কথা শুনে একটু অবাকই হলো,,,,তারপরও কিছু বলল না শুধু হাসলো। আমিও আর কথা না বাড়িয়ে,, হুমায়রার ঘরে গেলাম। হুমায়রা কে দেখলাম বাথরুম থেকে বেড় হতে। আমি ওকে বললাম। 

আমি : তুমি এখনো রেডি হও নাই? 

হুমায়রা : (কিছুটা চমকে গিয়ে) তুই,,,,,! তুই এখানে কি করস? 

আমি : আজকে শুক্রবার,, তোমাকে নিয়ে ঘুরতে যাবো। 

হুমায়রা : আমি যাবো না। 

আমি : আরে,,, চাচী অনুমতি দিছে। 

হুমায়রা : তাই কি হইছে আমি যাবো না। 

অনেকক্ষণ জোর করার পর যেতে রাজি হলো। কিছুতেই আমার সাথে ঘুরতে যাবে না। 


পার্কের একটা বেঞ্চে বসে আছি। দুজনের একজনের মধ্যে কোন কথা নেই। ও অন্য দিকে মুখ করে আছে। নীরবতা ভেঙে আমি হুমায়রাকে বললাম "ফুচকা খাবা? "

হুমায়রা : ওই,,,,তুই আমাকে তুমি কইরা বলিস কেন? কয়দিন ধরে দেখতাছি তুই আমার সাথে তুমি আমি করে কথা বলছিস। 

আমি : তো কিভাবে কথা বলব? 

হুমায়রা : আগে যেভাবে বলতি,,, তুই তুকারি করে কথা বলবি। 

আমি : তুমি আমার থেকে বড় না,,,? সেই জন্য তুমি আমি করে বলি। 

হুমায়রা : আবার,,,,,। এখন থেকে আর বলবি না। 

আমি : ঠিক আছে,,, এখন বল ফুচকা খাবা। 

কোনো কথা নেই। 

আমি দুই প্লেট ফুচকা নিয়ে এলাম। ওর প্লেটে ঝাল বেশি করে দিয়ে এনেছি। ও ফুচকা খাওয়া শুরু করল। আমি শুধু তাকিয়ে রইলাম ওর দিকে। ও যে ঝাল খেতে পারে তা আমি জানি,,,,কিন্তু এত পরিমাণে ঝাল খেতে পারে তা আমি জানতাম না। কোন ধরনের রিঅ্যাকশন নাই। ফুচকার প্লেট পুরোটা শেষ করে চুপচাপ বশে রইল। আমি বুঝতে পারলাম যে ওর এবার ঝাল ধরেছে,,,। চোখে পানি টলমল করতাছে,,, গড়িয়ে পরার অপেক্ষায় আছে। আমি ওকে আস্তে করে বললাম 

আমি : হুমায়রা,,, কি হয়েছে কথা বলতাছো না যে? 

হুমায়রা : (আমার কলারটা ধরে) হারামী এত ঝাল কেউ দেয়। পানি নিয়ে আয় তারাতাড়ি। 

আমি : পানি তো নাই,,, পানি পাবো কই। 

হুমায়রা : আমি কিছু বুঝি না,,,, যেখান থেকে পাড়স পানি নিয়ে আয়। 

ঝালে ওর চোখ দিয়ে টলমল করে পানি গড়িয়ে পড়ছে। 

আমি : পানি তো আশেপাশে নাই,,, তবে একটা উপায় আছে। 

হুমায়রা : কি উপায়? 

আমি : তেমন কিছু না,,, শুধু তোমার ওই ঠোঁট জোরা দিয়ে একটা কিস দেও,,,, তাহলে তোমার ঝাল চলে যাবে। 

হুমায়রা : কি বললি তুই,,,? (রাগী রাগী চোখে) 

আমি : কিছু না,,,, আমি পানি নিয়ে আাসতাছি। 


একটুপর পানি নিয়ে এলাম। ও পানি খেয়ে,,,, মনে হলো যেন মরতে মরতে বেচছে। আবার আমার কলার ধরে বলল। 

হুমায়রা : তুই কি বললি তখন?

আমি : আমি,,,,কই কিছু নাতো,,,আমি কিছুই বলি নাই। 

হুমায়রা : কিস করতে চাস আমায়,,,হুম,,। চল বাসায় আমি আজকে সবাইকে সব বলে দেব। 


একটুপর পানি নিয়ে এলাম। ও পানি খেয়ে,,,, মনে হলো যেন মরতে মরতে বেচছে। আবার আমার কলার ধরে বলল। 

হুমায়রা : তুই কি বললি তখন?

আমি : আমি,,,,কই কিছু নাতো,,,আমি কিছুই বলি নাই। 

হুমায়রা : কিস করতে চাস আমায়,,,হুম,,। চল বাসায় আমি আজকে সবাইকে সব বলে দেব। 

আমি : আরে না একদমই বলো না,,,।আমি তো মজা করছিলাম। 

হুমায়রা : মজা করছিলি না,,,তোর মজা আমি বেড় করব আজকে। 

 ও আমাকে ফেলেই রিকশা নিয়ে বাসার উদ্দেশ্যে চলে গেলো। আজকে মনে হয় আর আমার নিস্তার নেই। সব গিয়ে বলে দেবে। 

রাত ৯ টা বাজে বাসায় এলাম,,,।ভয়ে ভয়ে আছি,,, আজকে মনে আমাকে আর বাসায় থাকতে দিবে না। 

কলিং বেল বাজালাম। মা এসে দরজা খুলে দিল,,,কিন্তু কেমন জানি মায়ের চোখ টা মনে হয় অনেক রেগে আছে। বাসায় ডুকতে না ডুকতেই,,,কিছু বুঝে উঠার আগেই ,,ঠাস করে আমার গালে একটা চর পরল। বাবা মেরেছে চর টা,,,,। গাল ধরে সামনের দিকে তাকলাম,,, চাচা,চাচী ও হুমায়রাও এখানে আছে,,,।বুঝতে পারলাম সব বলে দিয়েছে,,,। কি কি যে বলছে কে জানে,, যে টুকু না করসি তার থেকে বেশি মনে হয় বানিয়েই বলেছে। 

মা : তোর কি লজ্জা সরম বলতে কিছুই নাই,,,,। তুই হুমায়রার সাথে এরকম একটা কাজ করতে পাড়লি। 

আমি : আমি কি করছি ওর সাথে? 

বাবা আমার গালে আরেকটা চর মেরে বলল। 

বাবা : চুপ একদম চুপ,,, আর একটাও কথা বলবে না তুমি। কি করছ না,,,,কি করছ তুমি জানো না। তুমি আমার বাসায় আর থাকতে পারবা না,,,যতদিন না হুমায়রার বিয়ে হয়। বুঝলে,,, কালকেই তুমি তোমার মামার বাসায় চলে যাবা,,,। 

আমি : কিন্তু,,, আমি কি করছি,, আমাকে তে বলবা?  

বাবা : বলছি না আর একটাও কথা বলবানা,,,। তোমার কারণে আমাদের দুই ভাইয়ের সম্পর্ক নষ্ট করতে পারবো না। 


চলবে,,,

Post a Comment

0 Comments