টাকা দিয়ে কি আসে যায়,,,। যদি পছন্দের মানুষটাই না থাকে।
হুমায়রা : কি বললি,,,,। তোর আবার পছন্দের মানুষও আছে,?
আমি : কেন থাকতে পারে না,,,,। তুই এখানে থাক আমি গেলাম।
বলেই চলে আসলাম।
নয় দিন পর
আমি রেস্টুরেন্টে বসে খাচ্ছি। তখন একটা টেবিলের দিকে আমার চোখ টা আটকে গেলো। আয়মান ভাই (হুমায়রার হবু স্বামী) ,,, সাথে একটি মেয়ে। ওদের ভাবসাব দেখে মনে হল ওরা কি নিয়ে ঝগড়া করছে। আমি ভাবলাম গিয়ে দেখা যাক ব্যাপারটা কি,,,। আমি ওদের টেবিলের চেয়ারে গিয়ে বসলাম আর আয়মান ভাই কে উদ্দেশ্য করে বললাম "কি অবস্থা ভায়া,,,। এটা কে বেয়াইন সাব নাকি। " ওই মেয়েটা আমাকে উদ্দেশ্য করে আয়মান ভাই কে বলল "কে,,ও,,? আর আমাকে কেন বেয়াইন সাব বলছে,,,?" আয়মান ভাই আমাকে বলল " না,,,,ও তোমার বেয়াইন সাব নয়। " আমি বললাম "তাহলে কে আপনার গার্লফ্রেন্ড? "
আয়মান ভাই : হ্যা,,,ও আমার গার্লফ্রেন্ড।
আমি : বাহ্,,,ভাই,,বাহ্। আপনার প্রেমিকা থাকা সত্বেও আপনি হুমায়রা কে বিয়ে করতে চাচ্ছেন।
আয়মান ভাই : ভাই,, দেখ আমি তোমার চাচাতো বোন কে বিয়ে করতে চাই না। বাড়ি থেকে চাপ দিচ্ছে তাই আমি রাজি হয়েছি,,।
আমি : বিয়ে করবেন না,,,তাহলে হুমায়রা কে কেন বললেন না।
আয়মান ভাই : বলার সুযোগ কই পেলাম বল তো।
আমি : তাহলে আপনি কি এই মেয়েকে বিয়ে করতে চাচ্ছেন?
আয়মান ভাই : হ্যা,,,,আমি ওকে ভিষণ ভালোবাসি। প্লিজ ভাই আমাদেরকে সাহায্য করুন,,,,।
আমি : আপনাদের পরিবার কি জানে আপনাদের ব্যাপারটা,,,?
আয়মান ভাই : হ্যা,,,,কিন্তু আমার পরিবার ওকে মেনে নেবে না,,,। আর ওর পরিবার আমাকে তাদের জামাই করতে রাজি আছে।
আমি : তাহলে,,,,তো হলোই,,, পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করে ফেলেন। এক দেড় মাস পর আপনার পরিবার থেকে এমনিতেই উপায় না পেয়ে মেনে নিতে বাধ্য।
আয়মান ভাই : কি,,, বলছো কি,,,,তাহলে হুমায়রার কি,,,হবে।
আমি : হুমায়রার কথা আপনাকে ভাবতে হবে,,,ওর কথা ভাবার জন্য আমি আছি,,,। তাই আর দেরি না করে এখনি গিয়ে বিয়ে করে আপনার মা–বাবা কে জানিয়ে দেন,,,,আর এক দেড় মাস বাইরে কেথাও ঘুরে আইসেন।
আয়মান ভাই : ভাই আপনি সবকিছু ম্যানেজ কইরেন,, এদিক টায়,, আমরা গেলাম।
আমি : হুম,,, ঠিক আছে,, নো প্রবলেম।
আমি তো আনন্দে আত্মহারা হয়ে গেলাম,,,। হুমায়রার বিয়ে ভেঙে যাবে। আর আমি হুমায়রার কে আমার মনের কথা বলে দিব।
ওই দিন রাতের বেলায় ছাদে গিয়েছি,,,,,,। হুমায়রাও ওদের ছাঁদে এসে কান্না করছে,,,। আমি ওকে উদ্দেশ্য করে বললাম।
আমি : কি রে,,,কি হয়েছে কান্না করছিস কেন?
হুমায়রা : আমি দেখতে অনেক খারাপ?
আমি : না তো কেন কি হয়েছে,,,?
হুমায়রা : আমি কি কারো সাথে কখনো কোন বেয়াদবি করেছি?
আমি : না,, তোর মত ভালো মেয়ে আছে নাকি,,!
হুমায়রা : তাহলে আমার বিয়ে কেন ভেঙে গেলো?
আমি : (না জানার ভান করে) তোর বিয়ে ভেঙে গেছে,,, (অবাক হয়ে)।
হুমায়রা : হ্যা,,,, ওই ছেলেটা অন্য কাউকে,, ভালোবাসত,,,তার সাথে পালিয়ে বিয়ে করে নিয়েছে।
আমি : আহারে,,, সো,,স্যাড,,চিন্তা করিস না,,, আমি আছি না,,।
হুমায়রা : তুই কি করবি,,,?
আমি : আগে যেটা করতাম,,, শুক্রবার হলেই তোকে নিয়ে ঘুরতে যাবো,,,, অনেক মজা করব,,,।
হুমায়রা চোখের পানি মুছে মুচকি একটা হাসি দিয়ে বলল "পাগল একটা "। আমি ওকে বললাম,, " কালকে কিন্তু শুক্রবার,,, বিকেলে রেডি হয়ে থাকিস।
পরের দিন বিকেলে,,, আমি আর হুমায়রা নদীর ধারে বসে আছি। ও কোনো কথা বলছে না,,,। তাই আমি ওকে জিজ্ঞেস করলাম "কথা বলছিস না যে,,,,এখনো মন খারাপ করে কি লাভ। "
হুমায়রা : কই না,,,তো,,কিছু হয় নাই তো,,,তুই কিছু বলছিস না,,,। তাই আমিও কিছু বলছি না,,,।
আমি : কিছু খাবি?
হুমায়রা : না,,,কিছু খাবো না,,,,।
দু জনেই চুপ করে বসে আছি,,,। হঠাৎ ও বলে উঠলো,,,।
হুমায়রা : তোর গার্লফ্রেন্ড আছে,,,?
আমি : না,,,কেন হটাৎ এই প্রশ্ন?
হুমায়রা : এমনি,,, এতো বড় হয়ে গেছিস,, এখনো কোন গার্লফ্রেন্ড নাই তোর,,,।
আমি : না,,,,কোন গার্লফ্রেন্ড নাই,,,তবে তুই যদি হতে চাস তাহলে হতে পারবি,,,।
হুমায়রা : আমি মানে,,,,ফাজিল ছেলে,, আমি তোর থেকে বড় না,,,।
আমি : ৬ মাসের বড়ই তো,,,,এটা কোন ব্যাপার না,,,।
হুমায়রা : কেন,, আমাকে কেন তোর গার্লফ্রেন্ড বানাতে হবে,,?
আমি : কারন আমার তোকে ভালো লাগে।
হুমায়রা : ছিঃ এসব বলে না। আমি তোকে আমার ভায়ের মতন ভাবি,,।
আমি : কিন্তু আমি তো তোকে আমার বোনের মতন দেখি না,,।
হুমায়রা : কেন দেখবি না,,। দেখতে হবে।
আমি : পারবো না।
হুমায়রা : ধুর তোর সাথে কথা বলেই লাভ নাই।
আমি হুমায়রার হাত দুটো ধরে ওকে বললাম "আমি কিন্তু সিরিয়াসলি বলছি আমি তোকে অনেক ভালোবাসি,,।" হুমায়রা হাত ছাড়িয়ে নিয়ে,,,, আমাকে বলল,,"দেখ এবার কিন্তু বেশি বেশি হয়ে যাচ্ছে। আমি তোকে ভালোবাসতে পারব না। আমি বললাম "কিন্তু কেন? বাসলে কি হবে। আমার মতো তোমাকে কেউ এতো কেয়ার করতে পারবে,,,। ও আমার কোন কথাই শুনল না। একা একাই বাসায় চলে এলো।
বেশ কিছু দিন এভাবে চলে গেলো। আমি ওকে অনেক বার বোঝানোর চেষ্টা করছি,,,,।কিন্তু ও কিছুতেই বুঝতে চায় না যে আমি ওরে কতটা ভালোবাসি,,,। একদিন ওকে দেখলাম রাস্তা দিয়ে যাচ্ছে। তাই আমি ওকে ডাকলাম।
আমি : হুমায়রা,,,এই হুমায়রা শোন,,,আমার কথাটা একবার শোন।
হুমায়রা : (দাঁড়িয়ে) কি ব্যাপার এতো চেচাচ্ছিস কেন?
আমি : চল যেতে যেতে বলি।
হুমায়রা : আমি তোর কোন কথা শুনতে চাই না।
আমি : দেখ হমায়রা,,,আমি তোকে আবারে বলছি,, আমি কিন্তু তোকে অনেক ভালোবাসি,,,,।
ঠাস ঠাস করে গালে,,দুইটা চড় বসিয়ে বলল
হুমায়রা : একদম চুপ,,,,আমি তোর কোন কথা শুনতে চাই না। আমি তোকে ভালোবাসি না। আই,,,,হেট,,,,ইউ।
আমি : বাট,,,আই,,,লাভ,,ইউ,,,।
হুমায়রা : চুপ একদমই চুপ,,, কোন কথা বলবি না,,,।আমার সামনে আর কোন দিনও আসবি না,,,।আমি তোকে দেখতে চাই না,,,। সামনে আমার পরীক্ষা,,,,, আমাকে কোন রকম ডিস্টার্ব করবি না।
আমি : এভাবে বলছিস কেন,,! আমি তোকে অনেক ভালোবাসি। ঠিক আছে তোর যেহেতু সামনে পরীক্ষা তাই এই কয়দিন,,, আমি তোর আশে পাশেও আসবো না,,,,তবে পরীক্ষার পরে কিন্তু আমি আবার তোর কাছে ফিরে আসবো,,,।
চলবে,,,,,
0 Comments