হালকা বৃষ্টি ও এখনো আমাকে জরিয়ে ধরে আছে। একটু পর বাসার সামনে এসে রিকশা থামল,,,,। ও তখন আমাকে ছেড়ে দিয়ে,, রিকশা থেকে নেমে ওর বাসায় চলে গেলো,,,,। আমি রিকশার ভাড়া মিটিয়ে আমার বাসায় চলে আসলাম। বাইরে এখন প্রচুর বৃষ্টি হচ্ছে।
পরের দিন বিকেলে আমি আবার ওই মেলায় গেলাম,,,। হুমায়রার জন্য দুই প্যাকেট কাচের চুরি কিনলাম। রাতে ওর বাসায় গেলাম।,, চাচি কে বললাম "হুমায়রা কোথায়? " চাচি বলল " ঘরেই হবে হয়তো,," আমি হুমায়রার ঘরে গেলাম,,, ও ঘরে নেই,,, কোথায় গেলো তাহলে,,। আমি ভাবলাম ও হয়তো ছাদে গিয়েছে,,। তাই আমিও ছাদে গেলাম। হুমায়রা একা একা দাড়িয়ে আছে। চাদের আলোয় ওর মুখ টা স্পষ্ট ফুটে উঠেছে,,,,।ওর ঘন কালো চুল বাতাসে উড়ছে। আমাকে দেখে বলল " তুই এখনে কি কেন? " আমি বললাম "তোকে একটা গিফট দিতে এসেছি। "
হুমায়রা : গিফট,,, তুই আমাকে গিফট দিবি (হাসতে হাসতে বলল)
আমি : কেন গিফট কি দিতে পারি না,,!
হুমায়রা : না,,কোন দিন তো আমাকে গিফট করিস নি তাই,,,। তা কি গিফট দিবি দেখি।
আমি : চোখ বন্ধ কর,,,।
হুমায়রা : কেন চোখ বন্ধ করতে হবে কেন,,? আমি চোখ বন্ধ করতে পারবো না।
আমি : আরে আগে তো বন্ধ কর,,,তারপর দেখই না তোমাকে কি দেই
হুমায়রা চোখ বন্ধ করল। আমি চুরি জোড়া ওর হাতে দিলাম। ও চোখ খুলেই, চুরি দেখে খুশিতে লাফাতে লাগলো।
হুমায়রা : থ্যাংক ইউ,,,থ্যাংক ইউ,, থ্যাংক ইউ সো মাচ,,,।
আমি : এবার খুশিতো,,,।
হুমায়রা : হুম,,,,।
আমি : এখন একটু হাসি দে তো,,।
ও আমার দিকে তাকিয়ে হাসি একটা দিয়ে চলে গেলো। কি হাসিরে ওর আমি মনে হয় এখন পাগল হয়ে যাবো।
তারপর থেকে আমরা আবার প্রায়ই কথা বলি,,,।একসাথে কলেজে যাই,,। প্রতি শুক্রবার বিকেলে ওকে নিয়ে ঘুরত যাই। এ ভাবে ওর সাথে সময় কাটাতে কাটাতে কখন যে ওকে ভালোবেসে ফেলেছি,,বুঝতেই পারি নাই। এখন ওকে ছারা আমার কিছুই ভালো লাগে না। ভাবলাম ওকে এই শুক্রবার,,, আমি যে ওকে পছন্দ করি সেটা বলে দিব নয়তো আবার যদি রিয়ার মতো ওর বিয়ে হয়ে যায়। রিয়া হলো আমার স্কুল লাইফের ভালোবাসা,,,। আমি ওকে কতটুকু ভালোবাসতাম তা জানি না। কিন্তু আমি রিয়াকে কখনোই বলতে পারি নাই যে আমি তাকে ভালোবাসি,,,। তার অনুভূতি গুলো এখনে শূন্যের কাঁটাতারে ই বিধে আছে। রিয়ার ফ্যামিলীর অবস্থা তেমন ভালো ছিল না বলে ওকে তাড়াতাড়ি বিয়ে দিয়ে দেয় ওর মা,,,। যাইহোক রিয়ার গল্প অন্য কোন দিন শুনাবো,,,এবার মূল গল্পে আসা যাক।
শুক্রবার বিকেলে আমি ওদের বাসায় গেলাম। গিয়ে আমি পুরাই অবাক হয়ে গেলাম,,,, বাবা, চাচা,,, হুমায়রার মামা বসে আছে,,। ছেলে পক্ষ এসেছে,,হুমায়রাকে দেখতে। আমি কি করব কিছুই বুঝতে পাড়ছি না। আমার হাত পা কাঁপতাছে। চাচা আমাকে দেখে,, তাদের কাছে ডাকল। আমার সাথে ছেলে পক্ষের পরিচয় করিয়ে দিল। আমি তাদেরকে সালাম দিয়ে। পাশের সোফায় বসে পরলাম। আমি ভাবতাছি,,,ওর বিয়েটা কি ভাবে আটকানো যায়। আমি চাচাকে বললাম " চাচা,,হুমায়রার তো ৪ মাস পরে ইন্টার পরীক্ষা,,, ওকে ইন্টার পরীক্ষার পর বিয়ে দিলে হয় না। " ছেলের বাবা বলল "এখন তো শুধু বিয়েটা করাবো,,,, ইন্টার পরীক্ষার পর তো মেয়েকে নয় আমাদের বাড়ি তে পাঠাবে। " আমার চোখের সামনে হুমায়রার বিয়ে হয়ে যাবে ভাবতেই আমার চোখের সামনে কেমন জানি সবকিছু অন্ধকার হয়ে যাচ্ছে। কোথায় যেন তলিয়ে যাচ্ছি আমি,, আমার পায়ের নিচে থেকে যেন মাটি সরে গিয়েছে। একটুপর হুমায়রা কে নিয়ে আসা হলো,,,।আমার পাশেই বসানো হলো,,।ওকে অনেক সুন্দর লাগছিল। বিয়ের দিন তারিখ সব ঠিক করা হলো। আজ থেকে ২০ দিন পর হুমায়রার বিয়ে হয়ে যাবে। কি আর করার রয়ে যাবে না বলা কথা,,, শুধু স্মৃতিতেই জরিয়ে থাকবে তার নাম।
রাতে ছাদে বসে সিগারেট টানছিলাম। হুমায়রা ওদের ছাঁদে এসেছে। আমাকে সিগারেট টানতে দেখে বলল
হুমায়রা : কি রে ফাজিল ছেলে,,,। তুই সিগারেট টানস কেন।
আমি : তাতে তোর কি,,,? তুই কেন এখানে এসেছিস,,,? কয়দিন পর না তোর বিয়ে। যা ঘরে যা,,, বাইরে থাকলে কারও নজর লেগে যেতে পারে।
হুমায়রা : আমাকে নিয়ে তোকে ভাবতে হবে না,,,,।
আমি : ভালো কথা বললাম তো,,,। তাহলে তুমি থাক এখানে আমি চলে যাই,,,।
হুমায়রা : আরে যাবি কেন,,? দাঁড়া। শোন,,, আমার বিয়ের সকল কাজ কিন্তু তোকে খেয়াল রাখতে হবে।
আমি : আমি তোর বিয়েতে থাকতে পারব না,,,।আমরা বন্ধুরা মিলে প্ল্যান করছি ঘুরতে যাবো,,,।
হুমায়রা : ঠিক আছে,,,। নো প্রবলেম,,, ১০ হাজার টাকা মিস করলি,,,।
আমি : টাকা দিয়ে কি আসে যায়,,,। যদি পছন্দের মানুষটাই না থাকে।
হুমায়রা : কি বললি,,,,। তোর আবার পছন্দের মানুষও আছে,?
আমি : কেন থাকতে পারে না,,,,। তুই এখানে থাক আমি গেলাম।
বলেই চলে আসলাম।
চলবে,,,,,,,
0 Comments